আর্টিকেল রাইটিং – কিভাবে শুরু করবেন
আর্টিকেল রাইটিং হতে পারে একটি সম্ভাবণাময় ও সন্মানজনক পেশা, দারুণ একটি উপার্জনের উপায়। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইট আর্টিকেলের জন্য সন্মানজনক সন্মানী প্রদান করে। এছাড়াও রয়েছে আরো অনেকগুলো সাইট যেগুলোতে আর্টিকেল লেখার পর পেজভিউ অনুসারে পেমেন্ট করা হয় আর পেজভিউ চলতে থাকে সারাজীবন, সন্মানিও আসতে থাকে সারাজীবন। এছাড়া নিজস্ব ব্লগের জন্য আর্টিকেল লিখেও গুগল অ্যাডসেন্স থেকে প্রচুর আয় করা যায়। এছাড়াও রয়েছে আপওয়ার্ক যেখানে প্রতিদিন আর্টিকেল রাইটার চেয়ে কমপক্ষে ৫০০ ক্লায়েন্ট বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন। ফ্রি-ল্যান্স মার্কেটগুলোতে আর্টিকেল রাইটিং এর শত শত প্রজেক্ট রয়েছে, শুধু রাইটিং নিয়েই রয়েছে বেশকিছু সাইট যার কয়েকটি নিচে দেয়া হল-
মোট কথা, আপনি যদি আর্টিকেল লিখতে পারেন তো সারাজীবনে একদিনও আপনি কাজের অভাব বোধ করবেন না, শতভাগ গ্যারান্টি।
আর্টিকেল রাইটিং এর জন্য যোগ্য যারা
যারা ইংরেজী ভাষাটি ভালবাসেন, ইংরেজীতে খবর কিংবা গল্পের বই পড়েন, ইংরেজীতে যাদের রয়েছে অগাধ দক্ষতা, যে কোন ইংরেজী লেখা পড়ে বুঝতে পারেন, বাংলা থেকে ইংরেজী কিংবা ইংরেজী থেকে বাংলা অনুবাদ করতে পারেন; তারাই আর্টিকেল রাইটিং কে পেশা হিসেবে নিতে পারেন। যারা খুব দক্ষ নন কিন্তু মোটামুটি ইংরেজী জানেন তারা নিজেদের তৈরি করে নিতে পারেন।
ইংরেজীতে দক্ষতা অর্জণের জন্য নিচের ওয়েবসাইটগুলো ফলো করতে পারেন-
- BBC Learning English
- British Council
- Easy Word of English
- Fluentu
- Many Things
- Oxford University Press
আমি কি পারবো?
পারবো মানে! আর্টিকেল রাইটিং একদম সহজ। সত্যিকার অর্থেই যেনতেন একটা আর্টিকেল লেখা একেবারেই একটা সহজ কাজ। কিন্তু একটু সুন্দর করে ভালভাবে গুছিয়ে একটা মানসন্মত আর্টিকেল লেখা একটা শিল্পই বটে। সুতরাং, একটা কোয়ালিটি আর্টিকেল লেখার জন্য আপনাকে শিল্পী হয়ে উঠতে হবে। এ জন্য আপনাকে প্রচুর পড়াশুনা করতে হবে, ভাল ভাল লেখকদের লেখা পড়তে হবে, তাদের স্টাইল অনুসরন করতে হবে আর লিখতে লিখতে এক সময় আপনার অজান্তেই আপনার নিজস্ব একটা স্টাইল তৈরি হয়ে যাবে। নিজেকে ভালভাবে তৈরি করার জন্য নিচের সাইটগুলো ফলো করতে পারেন-
- Daily Writing Tips
- Content Is Currency
- Copy Blogger
- Men With Pens
- Write To Done
- HubPages Network
- Content Marketing Institue
কি লিখবেন?
প্রথমেই আপনাকে ঠিক করতে হবে কি বিষয়ে লিখবেন, লেখা শুরুর আগে যদি লেখার বিষয় বা টপিক ঠিক করতে না পারেন তাহলে তো লেখা শুরুই করতে পারবেন না। বিষয় ঠিক করার জন্য চিন্তা করে দেখুন কোন বিষয়ে আপনি সবচেয়ে ভাল জানেন, কোন বিষয়ে মোটামুটি জানেন। দুইটাই হতে পারে আপনার লেখার বিষয়। এর মানে আবার এই নয় যে, যে বিষয়ে জানেন না সে বিষয়ে কিছুতেই লিখতে পারবেন না। আপনি যখন আর্টিকেল রাইটিংকে প্রপেশন হিসেবে নেবেন, তখন আপনার ক্লায়েন্ট আপনাকে এমন অনেক বিষয় নিয়ে লেখার অর্ডার দিতে পারে যে বিষয়গুলো সম্পর্কে আপনি জানেন না।
তাহলে কি অর্ডার ফিরিয়ে দেবেন? তবে তো এই ক্লায়েন্ট আপনাকে আর কাজ দেবে না। তাহলে কি করবেন? রিসার্চ করবেন, ওই বিষয়ের ওপর রিসার্চ করে প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে লেখা শুরু করে দিবেন। ধরা যাক, আপনি ঠিক করেছেন ‘হোম লোন’ নিয়ে লিখবেন কিংবা আপনার ক্লায়েন্ট আপনাকে এই বিষয়টি নির্ধারণ করে দিয়েছে। প্রথমে চিন্তা করুন আপনি এ বিষয়ের পাঠক হলে কী কী জানতে চাইতেন। প্রাথমিকভাবে যেটা করতে পারেন সেটা হচ্ছে এ বিষয়ের ওপর কয়েকটি প্রশ্ন তৈরি করে ফেলুন। যেমন-
- হোম লোন কি?
- মানুষ কেন হোম লোন নেয়?
- হোম লোন নেয়ার আগে কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখা উচিৎ?
- হোম লোন নেয়ার সুবিধা-অসুবিধা কি?
- হোম লোন পাওয়ার জন্য কি করতে হয়?
- হোম লোন পেতে হলে কি কি কাগজ-পত্র জমা দিতে হয়?
- হোম লোনের ইন্টারেস্ট রেস্ট কত?
- হোম লোন কিভাবে পরিশোধ করতে হয়?
- পরিশোধ করতে না পারলে কি হয়?
- এ বিষয়ে কি কি আইন-কানুন রয়েছে? ইত্যাদি ইত্যাদি।
এরপর আপনি যেটা করবেন সেটা হচ্ছে হোম লোন লিখে গুগলে সার্চ দেবেন। র্যাংকিয়ের শুরুর দিকে যে-আর্টিগুলো পাবেন সেগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। দরকারী তথ্যগুলো টুকে রাখবেন। ইচ্ছে করলে আপনি উপরের প্রত্যেকটা প্রশ্ন ধরে ধরে সার্চ দিতে পারেন। প্রচুর আর্টিকেল পাবেন। আর্টিকেলগুলো আপনাকে ভাল সাপোর্ট দেবে। তবে আপনাকে অবশ্যই ওগুলোর চেয়ে ভাল এবং তথ্যবহুল আর্টিকেল লিখতে হবে। আর কোনভাবেই ওগুলোর কোন লাইন কপি করা যাবে না। কপি করছেন তো মরছেন।
আপনি কি কখনো ভেবেছেন একটা কিছু লিখে গুগলে সার্চ দিলে মিলি সেকেন্ডের মধ্যে গুগল হাজার হাজার পেজ থেকে লেখাগুলো আপনার সামনে এনে দেয়, কোথা থেকে এনে দেয়?
অনলাইনে প্রায় এক বিলিয়নেরও বেশি ওয়েবসাইট আছে। যখনই কোন ওয়েবসাইটে কিছু প্রকাশ হয়, গুগলের ক্রলার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে হাজির হয়ে যায় আর সেই ডাটাগুলো নিয়ে নিজস্ব ডাটা সেন্টারে জমা করে ফেলে। পরবর্তীতে কেউ সার্চ দিলেই আরেকটা ক্রলার সেই ডাটা সেন্টার থেকে ডাটা নিয়ে তাকে দেখিয়ে দেয়। সুতরাং আপনি যদি একটা লাইনও কপি করে ফেলেন, গুগলের কাছে সেটা ডুপ্লিকেট হিসেবে গণ্য হবে। সুতরাং আপনার লেখা সম্পূর্ণ ইউনিক হতে হবে।
আপনার লেখা ইউনিক হয়েছে কিনা চেক করতে নিচের টুলটি ব্যবহার করুন-
উপরের ছবিটির দিকে খেয়াল করুন, আপনি যে লেখাটা ডুপ্লিকেট কিনা চেক করতে চাইছেন, সেই লেখাটা কপি করে এই বক্সে পেস্ট করুন। তারপর ‘I am not a robot’ এই লেখাটার বামপাশের বক্সটিতে ক্লিক করে টিক মার্ক দিন। সবশেষে নিচের সবুজ ব্যাকগ্রাউন্ডের ওপর সাদা রঙে ‘Check Plagiarism’ লেখাটার ওপর ক্লিক করুন। চেকিং শুরু হয়ে যাবে আর কিছুক্ষণ পরই আপনি দেখতে পাবেন কত পার্সেন্ট ইউনিক হয়েছে আর কত পার্সেন্ট ডুপ্লিকেট হয়েছে।
আর্টিকেল রাইটিং এর প্রথম অংশ আজ এ পর্যন্তই। এই লেখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই অনেক বড় হচ্ছে। কয়েকটা পার্টে ভাগ করে লেখাটা প্রকাশ করা হচ্ছে। ২য় পর্ব এখানে, ৩য় পর্ব এখানে, ৪র্থ পর্ব এখানে। যারা আর্টিকেল লিখতে চাইছেন বা ব্লগিং করবেন বলে প্ল্যান করেছেন তাদের জন্য অপরিহার্য্য একটি লেখা এটি। সুতরাং, দরকারের সময় খুঁজে পেতে লেখাটাকে আপনার ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করে রাখুন।
No comments